রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১২ অপরাহ্ন
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পিতা কর্তৃক ১৪ দিন বয়সের নবজাতক কন্যা শিশুকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়ার চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার শিশুটির বাবা ফারুক ভুইয়া ও শিশুটির ক্রেতা জাকিয়া আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ঘটনাটি ঘটেছে কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের রামদী গ্রামে ।
শিশু কন্যা রাধিয়ার মা রিনা খাতুন (৩৫) জানান, ” আমার স্বামীর বাড়ি উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের বালিরা গ্রামে। রামদী গ্রামে আমার বাবার বাড়িতে গত ১৪ দিন পূর্বে কন্যা সন্তান রাধিয়ার জন্ম হয়। সোমবার সকাল ১১টার দিকে নবজাতক রাধিয়াকে ডাক্তার দেখানোর জন্য আমি হাসপাতালে যেতে চাইলে আমার স্বামী ফারুক ভূইয়া আমাকে যেতে নিষেধে করেন এবং তিনি একাই রাধিয়াকে ডাক্তার দেখানোর জন্য নিয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার সময় রাধিয়ার বাবা আমার ভাই শফিককে মোবাইল ফোনে জানান রাধিয়াকে এক মহিলার কোলে রেখে প্রস্রাব করতে গেলে মহিলা রাধিয়াকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই সংবাদ শুনে আমি আমার মা ও ভাইকে নিয়ে হাসপাতালে আসি, হাসপাতালে আমার স্বামী ও রাধিয়ার কোন খোঁজ না পেয়ে রাধিয়ার বাবার মোবাইলে ফোন করলে তা বন্ধ পাই।”
এ ঘটনার পর আমরা আমার স্বামী বাড়ি বালিরা গ্রামে গিয়ে শিশু এবং তার বাবার কোন সন্ধান না পেয়ে থানায় এসে মা রিনা খাতুন পুলিশের সহযোগিতা চাইলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাধিয়ার বাবাকে আটক করে ।
আটকের পর তার দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী মসূয়া ইউনিয়নের বেতাল গ্রামের সুমন ভূইয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশু কন্যা রাধিয়াকে উদ্ধার ও সুমনের স্ত্রী জাকিয়াকে গ্রেফতার করে।
রিনা খাতুন আরো জানান, রাধিয়াসহ তার ১ ছেলে ও ২ মেয়ে ও মাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তিনি। স্বামীর বাড়িতে তার বনিবনা না হওয়ায় বেশ কিছু দিন যাবৎ তিনি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
কটিয়াদী মডেল থানায় গ্রেফতারকৃত জাকিয়া আক্তার জানান, তার নিঃসন্তান বোনের জন্য ৭০ হাজার টাকায় তিনি রাধিয়াকে ক্রয় করে ছিলেন।
কটিয়াদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল জানান, নবজাতক রাধিয়ার মা রিনা খাতুনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে রাধিয়ার বাবা ফারুক ভুইয়া কে গ্রেফতার করলে তিনি জানান ৭০ হাজার টাকায় রাধিয়াকে বেতাল গ্রামের জাকিয়া আক্তারের নিকট বিক্রি করে দিয়েছেন । বেতলা গ্রাম থেকে জাকিয়া আক্তারকে গ্রেফতার এবং শিশুটিকে উদ্ধার করে তা মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে ।